ডেসিমেল থেকে বাইনারি নম্বরে রূপান্তর
আমরা জানি ডেসিমেল পদ্ধতির বেস হলো 10 এবং বাইনারি পদ্ধতির বেস হলো 2। ডেসিমেল পদ্ধতি থেকে বাইনারি পদ্ধতিতে রূপান্তরের দুটি ধারা হলো-
(১) ডেসিমেল নম্বরকে 2 দ্বারা বার বার ভাগ করতে হবে যতক্ষণ না ভাগফল শূন্য হয়।
(২) ভাগ শেষ বা অবশিষ্টকে উল্টো দিক থেকে পরপর পাশাপাশি সাজিয়ে বাইনারি নম্বর পাওয়া যাবে।
নিচের উদাহরণটি লক্ষ্য কর।
ভাগ | ভাগফল | ভাগশেষ |
---|---|---|
45÷2 22 ÷ 2 11÷2 5÷2 2÷2 1 ÷2 | 22 11 5 2 1 0 | 1 0 1 1 0 1 |
সমতুল বাইনারি নম্বর হলো অবশিষ্ট সংখ্যাগুলো নিচ থেকে উপরের দিকে অর্থাৎ 101101 |
সুতরাং, ( 45 )10 = (101101 )2
বাইনারি থেকে ডেসিমেলে রূপান্তর করতে হলে প্রত্যেকটি ডিজিটের স্থানীয় মানকে 2 এর সূচক হিসাবে লিখতে হবে। কোনো ডিজিটের ডান পাশে যতটি ডিজিট থাকবে ডিজিটকে 2 এর তত সূচক দিয়ে গুণ করতে হবে। এভাবে প্রত্যেকটি ডিজিটকে 2 এর সূচক দিয়ে গুণ করে যোগ করে ডেসিমেলের মান পাওয়া যায় এবং ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে 2-1, 2-2, 2-3 ইত্যাদি দিয়ে প্রথম থেকে পরপর ক্রমান্বয়ে করে গুণফলকে যোগ করে ডেসিমেলের মান পাওয়া যায়।
(101001)2 = 1 x 25+0x24+1 x 23+0x22+0x21+ 1x 20 =32+0+8+0+0+1
=41 (101001)2
=(41)10
দুই অবস্থার (two states) যে কোনো ব্যবস্থার জন্য বাইনারি নম্বর পদ্ধতি অত্যন্ত জনপ্রিয় কিন্তু সমস্যা হলো বাইনারি পদ্ধতিতে প্রতিটি নম্বর বা সংখ্যা অত্যন্ত বড় হয়ে যায়। এ জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে অক্টাল নম্বর পদ্ধতি ও হেক্সাডেসিমেল নম্বর পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
অক্টাল পদ্ধতির বেস হলো ৮ (আট) এবং আটটি ডিজিট হলো 0, 12, 3, 4, 5, 6, 7 । এরা ডেসিমেল পদ্ধতির মতো একই ভৌত অর্থ বহন করে।
অক্টাল পদ্ধতির সংখ্যাকে ডেসিমেল পদ্ধতিতে রূপান্তর করা যায়। মনে কর আমরা 172 কে অক্টাল থেকে ডেসিমেলে রূপান্তর করতে চাই।
(172)8= 1 × 82 + 7 × 81 + 2 x 80
=64+56 +2
=(122)10
এখন যদি আমরা (122)10 কে অক্টালে রূপান্তর করতে চাই তাহলে আমরা নিম্নোক্তভাবে করতে পারি।
ভাগ | ভাগফল | ভাগশেষ | |
---|---|---|---|
122÷8 15÷8 1÷8 | 15 1 0 | 2 7 1 |
এখানে ভাগশেষ বা অবশিষ্টকে নিচ থেকে ওপরের দিকের পাশাপাশি সাজিয়ে লিখলে অক্টাল সংখ্যা পাওয়া যায়। এখানে অক্টাল সংখ্যা হলো 172 সুতরাং
(122)10 = (172)8
অক্টাল থেকে বাইনারিতে রূপান্তর করার জন্য তিনটি বিট একত্রিত করে করা হয়। নিচে এরকম রূপান্তর দেখানো হলো—
অক্টাল | বাইনারি |
1 2 3 4 5 6 7 | 001 010 011 100 101 110 111 |
0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9 A, B, C, D, E, F এখানে দ্বারা 10-15 ডিজিটকে A, B, C, D, E, F বোঝানো হয়েছে।
পূর্ণসংখ্যার জন্য প্রত্যেক ডিজিটের স্থানীয় মান হলো 16 এর ঊর্ধ্বমুখী সূচক এবং ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে প্রতি ডিজিটের স্থানীয় মান হলো 16 এর নিম্নমুখী সূচক
নিচের সারণিতে তিন রকম নম্বর বা সংখ্যায় রূপান্তর দেখানো হলো :
ডেসিমেল নম্বর | হেক্সাডেসিমেল নম্বর | বাইনারি নম্বর | অক্টাল নম্বর |
---|---|---|---|
0 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 | 0 1 2 3 4 5 6 7 8 9 A B C D E F | 0000 10001 0010 0011 0100 0101 0110 0111 1000 1001 1010 1011 1100 1101 1110 1111 | 0 1 2 3 4 5 6 7 10 11 12 13 14 15 16 17 |
এই ধরনের রূপান্তরে সবচেয়ে কম তাৎপর্যপূর্ণ ডিজিট এর সূচক হলো 16° এর পরবর্তী ডিজিটগুলোর সূচক হবে 161, 162.....… ইত্যাদি।
এখন আমরা 19E হেক্সাডেসিমেল নম্বরকে ডেসিমেল সংখায় রূপান্তর করব।
(19E)16 = 1 x 162 + 9 x 161 + 14 x 160 [ যেহেতু E = 14 ]
= 256 +144 +14= 414
:- (19E)16 = (414)10
এখন আমরা (414)10 কে হেক্সাডেসিমেল নম্বরে রূপান্তর করব।
ভাগ | ভাগফল | ভাগশেষ | |
---|---|---|---|
414÷16 25 ÷ 16 1 ÷ 16 | 25 1 0 | 14 = E 9 1 |
:- (414)10 =(19E)16
নিচের চারটি নিয়মে বাইনারি নম্বরের যোগ করা যায়
(1) 0 + 0 = 0 অর্থাৎ শূন্যের সঙ্গে শূন্য যোগ করলে শূন্য হয়।
(2) 1 + 0 = 1 অর্থাৎ এক এর সাথে শূন্য যোগ করলে 1 হয়।
(3) 0 + 1 = 1 অর্থাৎ 0 এর সাথে এক যোগ করলে 1 হয়।
(4) 1 + 1 = 0 হাতে থাকে 1 ।
বাইনারি যোগের ক্ষেত্রে ডান দিক থেকে বাম দিকে যোগ হবে এবং হাতের এক বাম দিকের অংকগুলোর সাথে যোগ হবে।
এবার আমরা বাইনারি কয়েকটি যোগ করব।
এখন, 1101.01= 1x23+1 x 22+ 1x21+1 x 20+0x2-1+ 1x2-2
=8+4+1+.25 = 13.25
বাইনারি সংখ্যায় বিয়োগ নিচের নিয়মগুলো মেনে চলে।
বাইনারি সংখ্যার ভাগ দশমিক পদ্ধতির নিয়মেই করা হয়। নিচের উদাহরণগুলো লক্ষ করলেই তা বোঝা যাবে।
কম্পিউটার ব্যবস্থার ইলেকট্রনিক সার্কিট বা বর্তনীর কার্যনীতির ভিত্তি হলো জর্জ বুলি (George Boole) আবিষ্কৃত বুলিয়ান বীজগণিতের নীতি। বুলিয়ান বীজগণিত এমন যৌক্তিক বর্ণনা (logical statement) নিয়ে আলোচনা করে যার দুটি মাত্র মান থাকে হয় সত্যমান (true value) না হয় মিথ্যা মান (false value)। বাইনারি পদ্ধতি অনুযায়ী ডিজিটাল বর্তনী শুধু দুটি অবস্থা 'অন' (ON) এবং 'অফ' (OFF) চিনতে পারে। বুলিয়ান চলক যা যৌক্তিক বর্ণনায় সত্য মানকে (truevalue) কে । এবং এর মিথ্যা মানকে 0 দ্বারা নির্দেশ করা হয়। বুলিয়ান বীজগণিতে তিনটি মৌলিক অপারেটর ব্যবহার করা হয় ; এরা হলো (i) OR, (ii) AND, (iii) NOT । বুলিয়ান বীজগণিতে
(i) যোগ চিহ্ন + দ্বারা OR বোঝানো হয়। Y = A + B এটা পড়তে হয় Y, A অথবা B এর সমান।
(ii) গুণ চিহ্ন (x বা.) দ্বারা AND বোঝানো হয়। Y = A B, পড়তে হয় Y, A এবং এর B মান সমান।
(iii) বার চিহ্ন (—) দ্বারা NOT বোঝানো হয়। Y =Ā, একে Y, NOT A হিসাবে পড়তে হয়, Y এর মান A এর মানের সমান নয়।
common.read_more